মঙ্গলবার থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

সচিত্র সিলেট
প্রকাশিত জুলাই ৬, ২০২৫
মঙ্গলবার থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়াসহ ৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) থেকে সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি আহ্বান করা হয়েছে।

রোববার ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রেবাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইমা-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’-এর পক্ষ থেকে এ কর্মসূচী ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই পাঁচদফা দাবিতে সিলেটে চলছে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট। যা রোববার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সোমবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যেই সব ধরণের পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির ঘোষণা আসলো।

রোববার (৬ জুলাই) সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেও এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক শেখ এমরান হোসেন ঝুমু, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম এই স্মারকলিপিতে সাক্ষল করেন।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমল থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত সিলেটের গণপরিবহন, পণ্য পরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিকরা বিভিন্ন ভাবে বঞ্চিত ও অবহেলিত। বৃহত্তর সিলেটের লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবী, ব্যবসায়ী ও মালিক-শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম পাথর কোয়ারী। কিন্তু ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে সিলেটের কোটি মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। ২০১৮ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় সিলেটের সকল পাথর কোয়ারীসমূহ। ফলে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম দুঃখ ও দুর্দশা। কর্মহীন হয়ে পড়েন বৃহত্তর সিলেটের প্রায় কোটি মানুষ।

এতে আরও বলা হয়, বর্তমানে রোজগারবঞ্চিত সিলেটের প্রান্তিক এ জনপদে বিরাজ করছে দুর্ভিক্ষাবস্থা। সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার যে প্রজ্ঞপন দিয়েছেন, তা মালিক-শ্রমিককে ধ্বংস করার আরো একটি নীল নকশা। একইভাবে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বেসরকারি প্রতিষ্টানকে দেওয়া আরেক রকম হয়রানী ও ষড়যন্ত্র। তাছাড়া গাড়ি তল্লাশীর নামে পুলিশ ট্রাক শ্রমিকদেরকে প্রতিনিয়ত হয়রানী করছে।

স্মারকরিপিতে ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার বাস-মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০ বছর এবং ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান ২৫ বছর, সিএনজি ও ইমা লেগুনা এর ক্ষেত্রে ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করার প্রজ্ঞপন বাতিল করতে হবে। সিলেটের সকল পাথর কোয়ারীর ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল এবং পাথর কোয়ারী খুলে দিতে হবে। বিআরটিএ কর্তৃক সকল গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাতিল ও গণ পরিবহন ও পণ্য পরিবহনের উপর আরোপিত বার্ধিত টেক্স প্রত্যাহার করতে হবে। সিলেটের সকল ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করন বন্ধ, বিদ্যুৎ মিটার ফেরত ও ভাংচুরকৃত মিলের ক্ষতি পূরণ এবং গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর ও বালুর ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। সড়কে বালু ও পাথরবাহী গাড়িসহ সকল ধরনের পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের হয়রানী বন্ধ করতে হবে।

এদিকে, সিলেটের ট্রাক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে পুরো জেলায় শনিবার থেকে ৪৮ ঘন্টার পণ্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে। রোববার যা আরও ২৪ ঘন্টা বাড়ানো হয়। সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সিলেটের ট্রাক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা মো. দিলু মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।

ফলে সোমবার পর্যন্ত পণ্য পরিবহান ধর্মঘট চলবে। আর মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে সকল পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি।

রোববার স্মারকলিপি প্রদানকালে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজির আহমদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ খান সাদেক, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবেদ সুলতান চৌধুরী তারেক, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি আব্দুস সালাম, সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আব্দুল জলিল, যুগ্ম আহবায়ক শওকত আলী বাবুল, মন্তাজ আলী, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির মহা সচিব ও ঐক্য পরিষদের সম্বন্নয়ক শাব্বীর আহমদ ফয়েজ প্রমূখ।

July 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031