রাজনগর প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের শাহানা বেগম (৫১) এলাকায় সুদের টাকা লেনদেন করতেন। বিভিন্ন জনের কছে তার বেশ টাকা পাওনাও আছে। গত ৩১ মার্চ শাহানা বেগমের লাশ পাওয়া যায় ঘরের বিছানায়। আত্মীয়স্বজনের কারো প্রতি কোনো সন্দেহ না থাকায় রাজনগর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। কিন্তু ময়নাতদন্তে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় শাহানা বেগমকে।
এব্যাপারে নিহতের মেয়ে বিউটি বেগম বাদী হয়ে রাজনগর থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ একই গ্রামের ইয়াওর মিয়ার ছেলে খলিল মিয়া (৩৫) কে আটক করেছে।
জানা যায়, রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের লুৎফুর মিয়ার স্ত্রী শাহানা বগেম (৫১) এলাকায় সুদের টাকা লেনদেন করতেন। একই গ্রামের ইয়াওর মিয়ার ছেলে খলিল মিয়া ওরফে ফেছাদ মিয়ার (৩৫) কাছেও তার প্রায় দেড় লক্ষা টাকা পাওনা ছিল। শাহানা বেগম সুদের টাকা নিয়ে বিভিন্নজনের সাথে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হতো। গত ৩১ শে মার্চ ঘরের বিছানায় শাহানা বেগমের লাশ পাওয়া যায়। নিহতের আত্মীয়স্বজন কারো উপর কোন সন্দেহ নেই বলে বিষয়টি স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবেই পুলিশকে জানায়। পরে রাজনগর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাপাতালে প্রেরণ করে এবং ১ এপ্রিল একটি অপমৃত্যু মামলা করে। দীর্ঘ ৪ মাস পর শাহানা বেগমের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। রিপোর্টে জানানো হয় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে শাহানা বেগমকে। পরে সোমবার (৪ আগস্ট) রাতেই নিহতের মেয়ে বিউটি বেগম রাজনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকর্মকর্তা রাজনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অরুপ সরকার ঘটনার প্রায় চার মাস পর শাহানা বেগম হত্যায় জড়িত ইসলামপুর গ্রামের ইয়াওর মিয়ার ছেলে মো. খলিল মিয়া উরফে ফেছাদ (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে গলা টিপে ভিকটিমকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন খলিল মিয়া।
গ্রেফতারকৃত খলিল মিয়া জানান, ‘শাহানা বেগম এলাকায় সুদের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতেন। সেও শাহানা বেগমের সুদে টাকা লেনদেন ছিল। গত ৩১ মার্চ ঘটনার রাতে খলিল মিয়া শাহানা বেগমের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ভিকটিম শাহানা বেগমকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফেলে দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে হত্যা করে। এদিকে পুলিশ গ্রেপ্তার খলিল মিয়াকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার জন্য আদালতে প্রেরণ করেছে।’
রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোবারক হোসেন জানান, ‘মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করলে জানতে পারবো।’