কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে উপজেলা বিএনপি। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী জালাল উদ্দিন ও প্রথম যুগ্ম-আহ্বায়ক রওশন খান সাগরের যৌথ স্বাক্ষরে বিএনপির দলীয় প্যাডে এসব কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে ৮ কমিটির স্বাক্ষরিত অনুমোদপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নিজ আইডি থেকে পোস্ট করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির প্রথম যুগ্ম-আহ্বায়ক রওশন খান সাগর। এর কিছুক্ষণ পর আহ্বায়ক হাজী জালাল উদ্দিনও তাঁর আইডি থেকে এসব কমিটি পোস্ট করেছেন।
অনুমোদিত প্রতি কমিটিতে আহ্বায়ক, যুগ্ম-আহ্বায়ক (দু’জনই স্বাক্ষর ক্ষমতা সম্পন্ন) সহ ১১ জন করে ৮ কমিটিতে মোট ৮৮ জন নেতা স্থান করে নিয়েছেন। জয়জলস ইউনিয়নের আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন ইলিয়াছ মিয়া। যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন হোসাইন আহমদ। পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে আহ্বায়ক হয়েছেন এবাদুর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক হয়েছেন নূর উদ্দিন। পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে আহ্বায়ক তোফায়েল আহমদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইকুল ইসলাম। পাথারিয়ায় ইউনিয়নে আহ্বায়ক সিরাজুল আলম, যুগ্ম-আহ্বায়ক প্রাক্তন ইউপি সদস্য আক্কাস মিয়া। পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নে আহ্বায়ক হয়েছেন হাবিব উল্লাহ জায়গীরদার, যুগ্ম-আহ্বায়ক মতিউর রহমান জায়গীরদার। পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে আহ্বায়ক আওলাদ হোসেন, যুগ্ম-আহ্বায়ক শ্যামল হোসেন। দরগাপাশা ইউনিয়নে আহবায়ক আবদুল হান্নান, যুগ্ম আহবায়ক প্রাক্তন ইউপি সদস্য মুকিত মিয়া। শিমুলবাঁক ইউনিয়নে মিজানুর রহমাকে আহ্বায়ক ও আরজু মিয়াকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কমিটিতে স্থান পাওয়া জয়জলস ইউনিয়নের সদস্যরা হলেন, প্রাক্তন ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন, সিরাজ মিয়া, আবুল লেইছ, এমদাদুল হক, গুলজার আহমেদ, জসীম উদ্দিন, আকরামুল হক, দেলোয়ার হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান। পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের সদস্যরা হলেন, সামছুল ইসলাম, আবুল মিয়া, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, আফরুজ আলী, এমদাদুর রহমান, রুকন উদ্দিন, আবুল খয়ের, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সুমন ও কাজী আবদুল ওয়াদুদ। পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে মঈনুল হোসেন, মহিবুর রহমান মবু, সিপাউর রহমান, ছাব্বির আহমদ, রাহুজ্জামান, প্রাক্তন ইউপি সদস্য মাহবুব খান, দুলেন মিয়া, শিরুল আহমেদ চৌধুরী ও আবু ছায়েদ সদস্য পদ পেয়েছেন। পাথারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য হয়েছেন হারুনুর রশিদ, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল মতিন, ময়না মিয়া, আরিফ রেজা আলেক, আঙ্গুর মিয়া, আতিকুর রহমান, ফয়জুল ইসলাম ও শাহ আলম। পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের সদস্যরা হলেন, আশিক মিয়া, আকিবুল মিয়া, তোফায়েল আহমদ, আরজান খাঁন, চন্দন মিয়া, জসীম উদ্দিন, পালিশ মিয়া, সুজাত মিয়া ও ছোয়াব আলী।পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে তফজ্জুল হোসেন, প্রাক্তন ইউপি সদস্য সামছুল হক, সাফিক মিয়া, সহিবুর রহমান, সামছুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, রাহিম নূর, মুজিবুর রহমান ও আলতা হোসেন বিএনপির সদস্য পদ পেয়েছেন। দরগাপাশায় মজনু মিয়া, হুছবান আহমদ চৌধুরী বাহার, প্রাক্তন ইউপি সদস্য ছালেক আহমদ, ফয়জুল করিম, দিলদার চৌধুরী, শিহাব উদ্দিন স্বপন, সেলিম আহমদ, জুনেদ আহমদ ও আবুল খয়ের পেয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য পদ। শিমুলবাঁক ইউনিয়ন বিএনপিতে সদস্য হয়েছেন ফয়জুর রহমান মাস্টার, আবুল লেইছ, নিজাম উদ্দিন, মিজানুর রহমান, মাও. আইন উদ্দিন, মানিক মিয়া, ফয়জুর রহমান, রেজাউল করিম রেজু ও শহীদ আলম।
অবশ্য, কমিটি প্রকাশের পর থেকেই ফেসবুকে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আড়ালে থেকে কেউ কেউ ক্ষোভও ঝাড়ছেন।
এদিকে, প্রকাশিত এসব কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়েও লেখালেখি করছেন অনেক নেতাকর্মী।
নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, যে কারণে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে যথা সময়ে, নিয়ম মেনে যেনো প্রতি ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন হয়ে যায়। ওয়ার্ড কমিটি গঠনে বিলম্ব হলে ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনেও বিলম্ব হবে। উপজেলায়ও বিলম্ব হবে। সুন্দর প্রক্রিয়াটিকে সচল রেখে কাজ করার আহ্বান সকলের।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী জালাল উদ্দিন ও প্রথম যুগ্ম-আহ্বায়ক রওশন খান সাগর বলেন, কেন্দ্রিয় নির্দেশনা মেনে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি প্রতিটি ইউনিয়নে সুন্দর একটি করে কমিটি দেওয়ার। আমরা সকল ইউনিয়নে কর্মী সভা করেছি। জাতীয়তাবাদের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদরের কাছ থেকে মতামত নিয়েছি। যারা ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমলে মামলা-হামলার শিকার হয়েছিলেন, কারাবরণ করেছিলেন, মামলা খেয়ে দিনের পর দিন ঘরবাড়ি ছেড়ে বাহিরে দিনরাত কাটাতে হয়েছিলো তাদেরকে মূল্যায়ণ করার চেষ্টা করেছি। কোনো দোসরা যেনো কমিটিতে স্থান না পায় সেদিকে সতর্ক ছিলাম। কারো মনে কষ্ট থাকলে তাদের প্রতি অনুরোধ, আসুন সব কষ্ট ভুলে জিয়ার আদর্শে রাজনীতি করে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী করতে কাজ করি।
উল্লেখ্য, অনুমোদিত এই কমিটিকে আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে প্রতি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব ওয়ার্ড কমিটি গঠনের পর সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন হবে উপজেলা কমিটির সুপার ফাইভ। যারা পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন। এসব কমিটিতে যে ৮ নেতা আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন তারা কেউই ইউনিয়ন কমিটি গঠনের সম্মেলনে প্রার্থী হতে পারবেন না।