নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চাউলধনী দক্ষিণ পাড়স্থ চৈতননগর গ্রামে স্কুল ছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় বহুল আলোচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম’সহ ৮ জনের মৃত্যুদন্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১৭ জনের দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের (প্রথম) ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন।
বহুল আলোচিত ওই মামলার ব্যাপারে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) কামাল হোসেন বলেন, আদালতে রায় ঘোষণার সময় মামলার ৩২ জন আসামীর মধ্যে ৩১ জন আসামিই উপস্থিত ছিলেন। শুধুমাত্র মামুনুর রশীদ নামের এক আসামি পলাতক রয়েছেন। তাই তার নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
স্কুল ছাত্র সুমেল হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিশ্বনাথ উপজেলার সাইফুল আলম, নজরুল আলম, সদরুল আলম, সিরাজ উদ্দিন, জামাল মিয়া, শাহিন উদ্দিন, আব্দুল জলিল, আনোয়ার হোসাইন। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ইলিয়াছ আলী, আব্দুন নুর, জয়নাল আবেদীন, আশিক উদ্দিন, আসকির আলী, অলিদ মিয়া ওরফে ফরিদ মিয়া, আকবর মিয়া। তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছর করে কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
২ বছরের সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- লুৎফুর রহমান, ময়ূর মিয়া, মামুনুর রশিদ, কাউসার রশিদ, দিলাফর আলী, পারভেজ মিয়া, ওয়াহিদ মিয়া, দিলোয়ার হোসেন, আজাদ মিয়া, মুক্তার আলী, আব্দুর রকিব, আগুর আলী, জাবেদ ইসলাম, শফিক উদ্দিন, মখলিস মিয়া, ফিরোজ আলী, ফখর উদ্দিন।
ওই ঘটনায় নিহত সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী বাদী হয়ে ২০২১ সালে ৩মে সিলেটের বিশ্বনাথ থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরোও ১৫/১৬ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে হত্যা মামলাটি দায়ের করে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ১৫ মার্চ ওই মামলায় আরও ৫ জনকে সম্পৃক্ত করে চার্জশীট করে থানা পুলিশ। রায় ঘোষণার পূর্বে ওই মামলায় ১৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামলার বাদীর এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১মে বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চাউলধনী হাওরের দক্ষিণ পাড়স্থ চৈতননগর গ্রামের বাসিন্দা ও মামলার বাদী ইব্রাহিম আলী সিজিল গংদের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি উত্তোলন করে রাস্তায় ফেলতে যান বহুল আলোচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলমসহ তাঁর লোকজন। এসময় নিজেদের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি তুলতে বাধা দেন মামলার বাদী। এনিয়ে উভয় পক্ষের বাগ্বিতন্ডার এক পর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে বহুল আলোচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম নিজের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে বাদীর ভাতিজা হযরত শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সুমেল মিয়া ১৮টি গুলি বিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এসময় অন্যান্য আসামীদের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে সুমেলের পিতা মানিক মিয়া, বাদীর ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী মনির মিয়া, ছালেহ আহমদ রক্তাক্ত আহত হন।
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামের মৃত রইছ উল্ল্যাহর পুত্র ও নিহত স্কুল ছাত্র সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল মেম্বার।