সিলেটে দি মেঘালয় টি এস্টেটের ইজারা বাতিল নিয়ে আলোচনা

সচিত্র সিলেট
প্রকাশিত জুলাই ২৩, ২০২৫
সিলেটে দি মেঘালয় টি এস্টেটের ইজারা বাতিল নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নে অবস্থিতি ‘দি মেঘালয় টি এস্টেট’ নামক চা-বাগানের ইজারা বাতিল চাইছেন এলাকাবাসী। তারা ভূমিহীনদের মধ্যে স্থায়ীভাবে জমি বন্দোবস্ত প্রদানের দাবি জানিয়ে ইতিপূর্বে ভূমি উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেছেন। এছাড়া মাঠ পর্যায়েও চলছে নানা আন্দোলন কর্মসূচি।

এসব কর্মসূচির প্রেক্ষিতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে চারিকাটাবাসির এক যৌথ বৈঠক বুধবার অনুষ্টিত হয়। বৈঠকে ‌‘দি মেঘালয় টি এস্টেট’ নামক চা-বাগানের ইজারা বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্টিত হয়েছে।

বৈঠকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ‘দি মেঘালয় টি এস্টেট এন্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিঃ’ নামক চা-বাগানের ভূমির ইজারা বাতিল করে এখানে বসবাসকারীদের নামে স্হায়ী বন্দোবস্ত প্রদানের দাবী জানানো হয় ।

বিকেল ৩টায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স রুমে চারিকাটাবাসী আন্দোলনকারী এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হোসাইন মো: আল জুনায়েদ, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মুহাম্মদ আশিক কবির, জৈন্তাপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার জর্জ মিত্র চাকমা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার লাবনীসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশগ্রহন করেন।

চারিকাটাবাসীর পক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট জেলা শাখার সেক্রেটারি জেনারেল ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান করিম, সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, সিলেট জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা নাজমুল ইসলাম, ইউপি সদস্য হাফিজ জালাল, মনির আহমেদ ও সামছুজ্জামান সেলিম এলাকাবাসীর দাবি দাওয়া তুলে ধরেন।

তারা জানান, পাঁচমৌজার মানুষ স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করছেন। বিগত সরকার ‘দি মেঘালয় টি এস্টেট এন্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লি’ নামীয় চা-বাগানের নামে ইজারা দিয়ে এখানে বসবাসকারীদের বাস্তুহারা করার অপচেষ্টায় চালিয়ে যাচ্ছে।

চারিকাটা ইউনিয়নের হতদরিদ্র ভূমিহীন লোকজন ভিত্রিখেল পূর্ব, ভিত্রিখেল পশ্চিম, ভিত্রিখেল উত্তর, নয়াখেল উত্তর, নয়াখেল দক্ষিন এই পাঁচ’টি মৌজায় বসতবাড়ী নির্মাণ করে বংশানুক্রমে বসবাস করছেন। পাঁচটি মৌজায় ২ হাজার ৩ শ পরিবারের অন্তত ১৫ হাজার লোক বসবাস করেন।

বিগত ২০০৮ সাল থেকে এলাকাবাসী ‘দি মেঘালয় টি এস্টেট এন্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিঃ’ কোম্পানীর নামে ভূমি বন্দোবস্তের প্রক্রিয়া বাতিল করার দাবি জানাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একজন মন্ত্রীর আত্মীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চা-বাগানের নামে ভূমির লিজ নিয়েছিলেন।

নেতৃবৃন্দ ‘দি মেঘালয় টি এস্টেট এন্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিঃ’ নামীয় চা-বাগানের ভূমির ইজারা বাতিল করে সরজমিনে তদন্তপূর্বক এখানে বসবাসরত ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত প্রদান করার দাবী জানান।

ভূমি উপদেষ্টা বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এখানে বসবাসরত হাজার হাজার মানুষের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আহবান জানান।

বৈঠকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানান, সরজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং এলাকাবাসীর সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। এনিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।পরবর্তী বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনের কথা বলা।

September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930